বাংলাদেশে লোন (ঋণ) নিতে অনেকেই আগ্রহী হন ব্যক্তিগত প্রয়োজন, ব্যবসায়িক সম্প্রসারণ বা বাড়ি নির্মাণের উদ্দেশ্যে। তবে লোন নেওয়ার আগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ইন্টারেস্ট রেট (সুদের হার)। কম ইন্টারেস্ট রেটে ঋণ পাওয়া গেলে মাসিক কিস্তির বোঝা কমে এবং আর্থিক চাপ হ্রাস পায়। তাই অনেকেই জানতে চান — বাংলাদেশে সর্বনিম্ন ইন্টারেস্ট রেটে লোন দেয় কোন ব্যাংক? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়ার জন্য আমাদের জানতে হবে কোন ব্যাংক কী ধরণের লোনে কত সুদ নিচ্ছে এবং তাদের শর্তাবলী কী।
ব্যক্তিগত ঋণে সর্বনিম্ন ইন্টারেস্ট রেট কোন ব্যাংকে?
ব্যক্তিগত ঋণ (Personal Loan) সাধারণত চিকিৎসা, পড়াশোনা, বিয়ে, বা পারিবারিক প্রয়োজন মেটাতে নেওয়া হয়। ব্যক্তিগত ঋণে নিচের ব্যাংকগুলো তুলনামূলকভাবে কম ইন্টারেস্ট রেটে লোন অফার করে:
-
ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (EBL): ৯.৯৯% থেকে শুরু
-
ব্র্যাক ব্যাংক: ১১.৫% থেকে ১৩% পর্যন্ত
-
ডাচ-বাংলা ব্যাংক: ১০.৫০% থেকে
-
প্রাইম ব্যাংক: ১১.৫০% পর্যন্ত
-
এইচএসবিসি বাংলাদেশ: ১০.৫০% (নির্বাচিত গ্রাহকের জন্য)
এই হারগুলো ব্যাংক অনুযায়ী পরিবর্তনশীল এবং অনেক সময় প্রমোশনাল অফারের আওতায় থাকে। তবে সবচেয়ে কম ইন্টারেস্ট রেট পাওয়া যায় যখন গ্রাহকের ক্রেডিট স্কোর ভালো, নির্ভরযোগ্য ইনকাম সোর্স আছে এবং বিনিময়ে জামানত (Collateral) দেওয়া হয়।
হোম লোনে সর্বনিম্ন সুদ দেয় কোন ব্যাংক?
হোম লোন (গৃহঋণ) এর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত নির্দেশনা অনুযায়ী ৭.০০% থেকে ৯.০০% পর্যন্ত সুদের হার সীমিত রয়েছে।
-
সোনালী ব্যাংক (সরকারি): ৭.০০% (সরকারি কর্মচারীদের জন্য)
-
ডাচ-বাংলা ব্যাংক: ৮.৫০% থেকে
-
ব্র্যাক ব্যাংক হোম লোন: ৯.০০% পর্যন্ত
-
ইসলামী ব্যাংক হোম ফাইন্যান্স: শরিয়াহভিত্তিক, মুনাফা রেট ৮%–৯%
সরকারি ব্যাংকগুলোতে বিশেষত কর্মচারীদের জন্য হোম লোনে সবচেয়ে কম ইন্টারেস্ট রেট পাওয়া যায়। আবার কিছু ব্যাংকে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ রেট নির্ধারিত আছে।
SME বা ব্যবসায়িক ঋণে কম সুদ দেয় কোন ব্যাংক?
ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য SME Loan বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় সহজলভ্য হচ্ছে।
-
গ্রামীণ ব্যাংক: ৮%–৯%
-
ব্র্যাক ব্যাংক SME লোন: ১০.৫% থেকে শুরু
-
জনতা ব্যাংক: ৮%–১০% (সরকারি স্কিমে)
-
আইপিডিসি ফাইন্যান্স: ৯.৫% থেকে শুরু
-
ইউনিয়ন ব্যাংক (ইসলামিক): শরিয়াহ ভিত্তিক কম মুনাফা হারে SME ঋণ
উদ্যোক্তাদের জন্য লোন নিতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিফাইন্যান্স স্কিম (যেমন “স্টার্টআপ বাংলাদেশ” বা “নারী উদ্যোক্তা স্কিম”) এর আওতায় কম ইন্টারেস্টে লোন পাওয়া সম্ভব।
বাংলাদেশে কম ইন্টারেস্ট রেটে লোন দিতে সরকারি ব্যাংকগুলো যেমন সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অগ্রগণ্য ভূমিকা রাখে। তবে প্রাইভেট ব্যাংকগুলোর বিশেষ অফার এবং প্রমোশনাল ক্যাম্পেইনেও আপনি কম সুদে লোন পেতে পারেন। লোন নেওয়ার আগে অবশ্যই সুদের হার, প্রক্রিয়াগত খরচ (Processing Fee), কিস্তির সময়সীমা এবং শর্তাবলী ভালোভাবে জেনে সিদ্ধান্ত নিন।