ডিসকাউন্ট দিয়ে কাস্টমার বাড়ানোর ৭টি উপায়

আজকের প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসার দুনিয়ায় নতুন কাস্টমার পাওয়া এবং পুরাতন কাস্টমার ধরে রাখা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। এ জন্য ব্যবসায়ীরা নানা কৌশল অবলম্বন করে থাকেন। তবে এর মধ্যে অন্যতম কার্যকরী পদ্ধতি হলো ডিসকাউন্ট বা ছাড় দেওয়া। ডিসকাউন্ট কেবল কাস্টমারকে আকর্ষণই করে না, বরং তাদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক গড়তেও সহায়তা করে। সঠিকভাবে ডিসকাউন্ট স্ট্রাটেজি ব্যবহার করলে বিক্রয় বৃদ্ধি, ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি এবং গ্রাহকের বিশ্বাস অর্জন করা সম্ভব। এখন দেখা যাক কীভাবে ডিসকাউন্ট দিয়ে কাস্টমার বাড়ানো যায়।

১. মৌসুমি ডিসকাউন্ট

মৌসুমি ছাড় বা সিজনাল ডিসকাউন্ট ব্যবসার জন্য অত্যন্ত কার্যকরী। বিশেষ করে ঈদ, পূজা, পহেলা বৈশাখ বা বড়দিনের সময় মানুষ কেনাকাটায় বেশি আগ্রহী থাকে। এ সময় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিশেষ ছাড় দেওয়া হলে গ্রাহকরা আপনার দোকান বা অনলাইন স্টোর থেকে কেনাকাটায় আগ্রহী হবে। মৌসুমি ডিসকাউন্ট কেবল বিক্রয় বাড়ায় না, বরং ব্র্যান্ডের প্রতি গ্রাহকের আস্থা গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

২. প্রথম ক্রেতার জন্য বিশেষ অফার

নতুন গ্রাহকদের আকর্ষণ করার জন্য “ফার্স্ট টাইম বায়ার অফার” খুব জনপ্রিয় একটি কৌশল। প্রথমবার কোনো কাস্টমার যদি আপনার ব্যবসা থেকে কেনাকাটা করে এবং সঙ্গে সঙ্গে ডিসকাউন্ট পায়, তবে সে আনন্দিত হবে এবং পরবর্তীতে আবার আসার সম্ভাবনা থাকবে। উদাহরণস্বরূপ, প্রথম ক্রয়ে ১০% বা ২০% ছাড় দেওয়া যেতে পারে। এটি নতুন কাস্টমার অর্জনের দ্রুত উপায়।

৩. বাল্ক পারচেজ ডিসকাউন্ট

গ্রাহক যদি একসাথে বেশি পরিমাণে পণ্য কেনে, তাকে বিশেষ ছাড় দেওয়া যেতে পারে। যেমন – “৩টি কিনলে ১টি ফ্রি” অথবা “১০টির বেশি কিনলে ১৫% ছাড়”। এতে গ্রাহকরা বেশি পণ্য কিনতে আগ্রহী হন। একদিকে বিক্রয় বাড়ে, অন্যদিকে স্টক দ্রুত খালি হয়। ছোট ব্যবসায়ী থেকে বড় সুপারশপ পর্যন্ত সবাই এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করতে পারে।

See also  ইনভেস্ট ছাড়া কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়? ইনভেস্ট ছাড়া অনলাইন ইনকাম

৪. লয়্যালটি প্রোগ্রাম ডিসকাউন্ট

পুরনো কাস্টমারদের ধরে রাখতে লয়্যালটি ডিসকাউন্ট খুব কার্যকর। উদাহরণস্বরূপ, প্রতি ৫ম কেনাকাটায় বিশেষ ছাড়, অথবা নির্দিষ্ট পয়েন্ট জমলে ডিসকাউন্ট দেওয়া। এটি গ্রাহককে দীর্ঘমেয়াদে আপনার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রাখে। লয়্যালটি প্রোগ্রাম কেবল বিক্রয় বাড়ায় না, বরং গ্রাহকের সঙ্গে একটি বিশ্বাসযোগ্য সম্পর্কও তৈরি করে।

৫. ফ্ল্যাশ সেল ও সীমিত সময়ের অফার

“২৪ ঘণ্টার বিশেষ ছাড়” বা “শুধুমাত্র আজকের অফার” এর মতো ফ্ল্যাশ সেল গ্রাহকদের মধ্যে জরুরি সিদ্ধান্ত নেওয়ার মানসিকতা তৈরি করে। সীমিত সময়ের জন্য ডিসকাউন্ট দিলে গ্রাহকরা সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না এবং দ্রুত কেনাকাটায় আগ্রহী হন। এটি অনলাইন ব্যবসায় সবচেয়ে কার্যকর একটি কৌশল।

৬. রেফারেল ডিসকাউন্ট

বর্তমানে মুখের কথার প্রচারণা বা রেফারেল মার্কেটিং অত্যন্ত জনপ্রিয়। আপনি যদি বলেন, “কাস্টমার নতুন একজনকে নিয়ে এলে দুজনই ১০% ছাড় পাবেন”, তবে গ্রাহক স্বাভাবিকভাবেই তার বন্ধু বা পরিবারের সদস্যকে নিয়ে আসবে। এতে একদিকে নতুন কাস্টমার আসবে, অন্যদিকে পুরনো কাস্টমারও আপনার সঙ্গে যুক্ত থাকবে।

৭. অনলাইন কুপন ও সোশ্যাল মিডিয়া ডিসকাউন্ট

ডিজিটাল যুগে কাস্টমার বাড়ানোর জন্য অনলাইন কুপন কোড ব্যবহার করা খুবই জনপ্রিয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালিয়ে “DISCOUNT20” বা “SAVE50” এর মতো কুপন কোড দিলে অনলাইন কাস্টমাররা বেশি আকৃষ্ট হয়। এভাবে আপনি শুধু বিক্রয় বাড়াবেন না, বরং ব্র্যান্ডের প্রচারও বাড়াতে পারবেন।

ডিসকাউন্ট দেওয়া শুধু কাস্টমার আকর্ষণের মাধ্যম নয়, বরং এটি ব্যবসার প্রবৃদ্ধি ও ব্র্যান্ড গঠনের অন্যতম কার্যকরী উপায়। মৌসুমি অফার, প্রথম ক্রেতার ছাড়, বাল্ক পারচেজ, লয়্যালটি প্রোগ্রাম এবং অনলাইন কুপনের মাধ্যমে সহজেই গ্রাহকের সংখ্যা বাড়ানো যায়। তবে সব সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন ডিসকাউন্ট দেওয়ার কারণে ব্যবসার প্রকৃত লাভ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সঠিক কৌশল প্রয়োগ করলে ডিসকাউন্ট আপনার ব্যবসার জন্য লাভজনক এবং দীর্ঘমেয়াদি গ্রাহক তৈরির শক্তিশালী হাতিয়ার হয়ে উঠবে।

See also  ঘরে বসে প্যাসিভ ইনকাম করুন ৭টি উপায়ে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *