বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় বেসরকারি ব্যাংক হলো ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড (DBBL)। এটি দেশের ব্যাংকিং খাতে বিশেষ অবদান রেখেছে বিশেষ করে আধুনিক মোবাইল ব্যাংকিং, এটিএম সেবা এবং অনলাইন ব্যাংকিং সিস্টেম চালুর মাধ্যমে। অনেকেই জানতে চান, ডাচ বাংলা ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে আসলে কত টাকা লাগে এবং প্রক্রিয়াটি কীভাবে সম্পন্ন করা যায়। সাধারণত একাউন্ট খোলার সময় ন্যূনতম কিছু টাকার প্রয়োজন হয়, পাশাপাশি কিছু নির্দিষ্ট কাগজপত্রও জমা দিতে হয়। আজকের এই লেখায় আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো—ডাচ বাংলা ব্যাংকে একাউন্ট খোলার খরচ, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, একাউন্টের ধরন এবং সুবিধাসমূহ সম্পর্কে।
যা যা থাকছে
ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার খরচ কত?
ডাচ বাংলা ব্যাংকে একাউন্ট খোলার সময় খরচ নির্ভর করে একাউন্টের ধরণ ও ব্যাংকের নিয়মের ওপর।
-
সাধারণত একটি সেভিংস একাউন্ট খোলার জন্য ন্যূনতম ৫০০ টাকা থেকে ১,০০০ টাকা জমা রাখতে হয়।
-
কারেন্ট একাউন্টের ক্ষেত্রে প্রাথমিক জমা ২,০০০ টাকা থেকে শুরু হয়।
-
কিছু বিশেষ একাউন্ট যেমন স্টুডেন্ট একাউন্ট বা প্রবাসী একাউন্ট খোলার সময় খরচ কম হতে পারে।
👉 তবে ব্যাংক মাঝে মাঝে নীতিমালা পরিবর্তন করে, তাই সঠিক তথ্য জানার জন্য নিকটস্থ শাখায় যোগাযোগ করা উচিত।
একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার সময় গ্রাহককে কিছু কাগজপত্র দিতে হয়। এগুলো ছাড়া একাউন্ট খোলা সম্ভব নয়।
-
জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা স্মার্ট কার্ডের ফটোকপি
-
সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি (২ কপি)
-
জন্ম নিবন্ধন সনদ (যদি বয়স ১৮ বছরের নিচে হয়)
-
ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (TIN) বা E-TIN (প্রয়োজন হলে)
-
বিদ্যুৎ বিল/গ্যাস বিল বা স্থায়ী ঠিকানার প্রমাণপত্র
👉 যদি প্রতিষ্ঠানিক একাউন্ট খোলা হয় তবে ব্যবসায়িক ট্রেড লাইসেন্স এবং অন্যান্য ডকুমেন্টও লাগবে।
ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্টের ধরন
ডাচ বাংলা ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের একাউন্টের সুবিধা দিয়ে থাকে, যাতে বিভিন্ন শ্রেণীর গ্রাহক তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী একাউন্ট খুলতে পারে।
-
সেভিংস একাউন্ট: সাধারণ মানুষের সঞ্চয়ের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয়।
-
কারেন্ট একাউন্ট: ব্যবসায়ীদের জন্য যাদের লেনদেন বেশি হয়।
-
স্টুডেন্ট একাউন্ট: শিক্ষার্থীদের জন্য সহজ শর্তে খোলা যায়, প্রাথমিক খরচও কম।
-
এফডিআর একাউন্ট: দীর্ঘমেয়াদে সঞ্চয় রেখে সুদ আয় করার সুযোগ।
-
প্রবাসী একাউন্ট: বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো ও লেনদেন সহজ করার জন্য বিশেষ একাউন্ট।
👉 প্রতিটি একাউন্টের সুবিধা ও খরচ ভিন্ন ভিন্ন, তাই নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী নির্বাচন করতে হবে।
একাউন্ট খোলার ধাপসমূহ
ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া খুব বেশি জটিল নয়।
-
প্রথমে নিকটস্থ শাখায় গিয়ে একাউন্ট খোলার ফরম সংগ্রহ করতে হবে।
-
নির্ধারিত কাগজপত্রসহ ফরম পূরণ করে জমা দিতে হবে।
-
প্রাথমিক জমা হিসেবে নির্ধারিত টাকা ব্যাংকে জমা দিতে হবে।
-
ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই শেষে একাউন্ট চালু করবে এবং চেকবই বা এটিএম কার্ড প্রদান করবে।
👉 বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রে অনলাইন আবেদন করার সুযোগও রয়েছে, তবে শেষ ধাপে শাখায় গিয়ে কাগজপত্র জমা দিতে হয়।
ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্টের সুবিধাসমূহ
ডাচ বাংলা ব্যাংকে একাউন্ট খোলার পর গ্রাহকরা অনেক ধরনের সুবিধা পান।
-
দেশের সর্ববৃহৎ এটিএম নেটওয়ার্ক ব্যবহার করার সুবিধা।
-
মোবাইল ব্যাংকিং রকেট এর মাধ্যমে টাকা পাঠানো ও গ্রহণ।
-
অনলাইন ব্যাংকিং ও ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা।
-
সহজে বিল পরিশোধ, টিউশন ফি জমা ও ব্যবসায়িক লেনদেনের সুবিধা।
-
আন্তর্জাতিক ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড সুবিধা।
👉 এই কারণে ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী পর্যন্ত সবার কাছে সমান জনপ্রিয়।
ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার খরচ খুব বেশি নয়; সাধারণত মাত্র ৫০০ টাকা থেকে শুরু করলেই একটি সেভিংস একাউন্ট খোলা যায়। ব্যবসায়িক বা কারেন্ট একাউন্টের ক্ষেত্রে কিছুটা বেশি খরচ হয়। একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত রাখলেই সহজে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা সম্ভব। পাশাপাশি একবার একাউন্ট খুলে ফেললে গ্রাহকরা আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা যেমন এটিএম, মোবাইল ব্যাংকিং, অনলাইন ব্যাংকিং ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন। তাই যারা নিরাপদ এবং আধুনিক ব্যাংকিং সেবা নিতে চান, তাদের জন্য ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট হতে পারে অন্যতম সেরা পছন্দ।