প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হচ্ছে বাংলাদেশি রাষ্ট্রমালিকানাধীন বিশেষায়িত বাণিজ্যিক ব্যাংক। প্রবাসী বাংলাদেশিদের আর্থিক সেবা প্রদানের এই ব্যাংকের প্রধান লক্ষ্য।আজ আমরা আলোচনা করবো প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে কি কি ঋণ সুবিধা পাওয়া যায় এবং সেই সকল ঋণের সকল তথ্য জেনে নিন।
যা যা থাকছে
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের যাত্রা
প্রবাসী বাংলাদেশি জনগণের সেবার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সরকার ২০১০ সালে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠা করে। ২০১১ সালের ২০ শে এপ্রিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় কলম্বো প্রসেস এর ৪র্থ সম্মেলনে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের শুভ উদ্বোধন করেন।
আরো জানুনঃ ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন লোন সূমহ
এরপর ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই এ ব্যাংককে দেশের ৫৮ তম ব্যাংক হিসেবে তালিকাভূক্ত করা হয়। এই ব্যাংক প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্য বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি বেকারদের সহায়তা প্রদান। এখন পর্যন্ত প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ৫৩ হাজারের বেশি মানুষকে ঋণ দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে বলে জানা যায়। ২০১৪ সালে এ ব্যাংক অনলাইন ব্যাংকিং কার্যক্রমও চালু করেছে।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলেছেন, যারা দেশের বাইরে যেতে চান কাজের উদ্দেশ্যে কিন্তু আর্থিক কারণে যাওয়া হচ্ছে না, তারা জামানত ছাড়াই সরকারী ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবেন।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন সমূহ | probashi kallyan bank loan
বিদেশে অবস্থানরত কর্মীদের সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের লোন/ঋণ সেবা প্রদান করে থাকে। যেমনঃ
১. অভিবাসন ঋণ,
২. পুনর্বাসন ঋণ,
৩. বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ,
৪. বিশেষ পুনর্বাসন ঋণ।
প্রবাসী কল্যাণ অভিবাসন ঋণ
অভিবাসীদের সহায়তায় যেই ঋণ দিয়ে থাকে সেই ঋণকে অভিবাসন ঋণ বলা হয়। অভিবাসন ঋণকে মাইগ্রেশন লোনও বলা হয়।
নতুন ভিসার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩,০০,০০০ / তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করে। এবং পুনরায় প্রবেশ/রি এন্ট্রি ভিসার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২,০০,০০০/ বিশ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করে।
নতুন ভিসার জন্য যেই ঋণ নেওয়া হয় সেই ঋণ পরিশোধ করার সময়সীমা সর্বোচ্চ ৩ বছর এবং পুনরায় প্রবেশ/রে এন্ট্রি ভিসার জন্য নেওয়া ঋণ পরিশোধের সময় ২ বছর পর্যন্ত হয়।
এই ঋণ পরিশোধের ধরণ হচ্ছে, গ্রেস পিরিয়ড ( অতিরিক্ত সময়কাল) বাদ দিয়ে মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে হয়। ঋণের জন্য আবেদনের ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে আপনি ঋণ পেয়ে যাবেন। মাত্র ৯% সুদের হারে অভিবাসন ঋণ প্রদান করে। এবং এই ঋণের জন্য বাড়তি কোনো সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য নয়।
প্রবাসী কল্যাণ পুনর্বাসন ঋণ
বাংলাদেশি কোনো নাগরিক যদি চাকরির অথবা কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে দেশের বাইরে যেয়ে হয়রানির শিকার হয়ে দেশে ফিরে এসে স্বাবলম্বী হওয়ার উদ্দেশ্যে কোনো প্রকল্প শুরু করতে চায় সেক্ষেত্রে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সেই ব্যাক্তিকে পুনর্বাসন ঋণ দিয়ে সহায়তা করবে।
এই ব্যাংক সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পুনর্বাসন ঋণ প্রদান করে। এবং সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পুনর্বাসন ঋণ বিনা জামানতে দিয়ে থাকে। কিন্তু ৩ লক্ষ টাকার বেশি ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে হলে আপনাকে অবশ্যই কিছু জামানত রাখতে হবে।
এবং ৫ লক্ষ টাকার বেশি অথবা ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে হলে গ্যারান্টার প্রয়োজন হয়। ঋণ গ্রহীতা ব্যাক্তির অথবা গ্যারান্টারের মালিকানাধীন সম্পত্তি ব্যাংকটির অধীনে থাকবে। সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন করার ১০ কর্ম দিবসের মধ্যে আপনি ঋণ পেয়ে যাবেন।
এই ঋণ পরিশোধের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক আপনাকে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত সময় দিবে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের অভিবাসন ঋণের সুদের হার মোট ঋণের পরিমাণের ৯% পর্যন্ত হয়। এবং এই ঋণ নিতে বাড়তি কোনো সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য নয়।
প্রবাসী কল্যাণ বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ
প্রবাসী কোনো ব্যাক্তির পরিবারের সদস্য অর্থাৎ প্রবাসী ব্যাক্তির উপর নির্ভরশীল তার পরিবারের কোনো সদস্য, যেমন: বাবা, মা, ভাই, বোন, স্ত্রী, সন্তান যদি কোনো প্রকল্প শুরু করতে চাইলে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক তাকে জামানতবিহীন অথবা জামানতের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ প্রদান করে থাকে।
বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ যেই সকল খাতে ঋণ প্রদান করে সেগুলো হলো, কৃষি খাত, কুটির শিল্প, প্রাণী খাত, মৎস্য খাত, বাণিজ্যিক খাত।
একজন ব্যাক্তি সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ নিতে পারবে। ব্যাংক সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ বিনা জামানতে দিয়ে থাকে।
তবে, ৩ লক্ষ টাকার বেশি ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে হলে আপনাকে সহজ জামানত রাখতে হবে। এবং ৫ লক্ষ টাকার বেশি অথবা ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে হলে গ্যারান্টার প্রয়োজন হয়।
ঋণ গ্রহীতা ব্যাক্তির অথবা গ্যারান্টারের মালিকানাধীন সম্পত্তি ব্যাংকটির অধীনে থাকবে। ব্যাংক আপনাকে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত সময় দিবে ঋণ পরিশোধের জন্য।
বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণের সুদের হার দুই রকম। যেমন, পুরুষ ঋণ গ্রহীতার জন্য সুদের হার ৯% এবং মহিলা ঋণ গ্রহীতার ক্ষেত্রে ৭% সুদ। বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ নিতে কোনো সার্ভিস চার্জ দিতে হয় না।
প্রবাসী কল্যাণ বিশেষ পুনর্বাসন ঋণ
কোভিড-১৯ এর জন্য যেই সকল প্রবাসী কর্মী ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দেশে ফিরে এসেছে অথবা মারা গিয়েছে, সেই ব্যাক্তির পরিবারের একজন সদস্যকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক পুনর্বাসন ঋণ দিয়ে সহায়তা করছে।
একক ঋণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হয়। এবং গ্রুপ ঋণের ক্ষেত্রে প্রতি ব্যাক্তিকে ৫ লক্ষ করে ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করা হয়।
বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ এবং পুনর্বাসন ঋণের ন্যায় ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জামানত ছাড়া ঋণের ব্যবস্থা রয়েছে। এবং ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে হলে আপনাকে সহজ জামানত রাখতে হবে।
এবং ৫ লক্ষ টাকার বেশি ঋণ নিতে হলে গ্যারান্টার প্রয়োজন হয়। ঋণ গ্রহীতা ব্যাক্তির অথবা গ্যারান্টারের মালিকানাধীন সম্পত্তি ব্যাংকটির অধীনে থাকবে।
প্রকল্প এবং ব্যবসায়ের ধরণ অনুযায়ী ঋণ পরিশোধের মেয়াদ নির্ধারিত হবে। সর্বোচ্চ ৫ বছর সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে হয়। এই ঋণের সুদের হার সবচেয়ে কম। ৪% সুদের হারে ঋণ প্রদান করা হয়।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের সকল ঋণের সুদের হারঃ
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের সকল ঋণের নাম | সুদের হার | |
১. | অভিবাসন ঋণ | ৯% |
২. | পুনর্বাসন ঋণ | ৯% |
৩. | বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ | ৯%/৭% |
৪. | বিশেষ পুনর্বাসন ঋণ। | ৪% |
লোন নেওয়ার আগে অবশ্যই ব্যাংক সম্পর্কে , যে লোন নিবেন সে সম্পর্কে ভালো করে খোজ খবর নিবেন। অবশ্যই লোন বা এসব সুদের কার্যক্রমের দিকে ধাবিত হবার আগে ধমীয় দিক বিবেচনা করে দেখবেন ধন্যবাদ। আমাদের কাজ শুধু ইনফরমেশন দেওয়া বাকিটা আপনার সিদ্ধান্ত।
FAQ
Ami deshe sutite ashele rin dibe ashle riner dorkar r ki joma lagbe 10 lak nite ami abar bidesh chole ashbo 15 bosor silam
Deshe ashle rin pabo 14 bosor asi tao deshe jaini 1 bar o