কিভাবে জুসের দোকান খুলবেন? ( জুসের রেসিপি, জুস তৈরির যন্ত্র, প্রয়োজনীয় মূল্ধন, লাভ,লাইসেন্স ইত্যাদি) juice shop business Idea in Bangla, How to open a Fruit juice business, Organic Juice business idea.
আসসালামু আলাইকুম। আজ আমরা ফ্রুট জুসের দোকান কিভাবে শুরু করবেন সে বিষয়ে আলোচনা করবো।
আজকাল মানুষ সাস্থ্যের সম্পর্কে অনেক সচেতন। মানুষ আর রাসায়নিক মিশ্রিত খাদ্য খেতে ইচ্ছুক নয়। সময়ের পরিপেক্ষিতে অর্গানিক খাদ্যপণ্যের দিকে মানুষ বেশি আগ্রহ প্রকাশ করছে। তবে সাস্থ্য ভালো রাখার জন্য আমাদের নিয়মিত ফলের রসের মত শক্তিশালী খাবার প্রয়োজন। ঝতু অনুযায়ী বিভিন্ন ফল আসে আর মানুষ এই ফলের রস খেতে অনেক পছন্দ করে। এখন আপনি যদি ছোট পরিসরে কোন ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে ফলের ব্যবসা আপনার জন্য এক অন্যান্য ব্যবসা হতে পারে। আজকের আর্টিকেল এ আমরা আপনাদের ফলের ব্যবসা কিভাবে করবেন? সম্পন্ন গাইড লাইন নিয়ে আলোচনা করবো।
যা যা থাকছে
জুসের ব্যবসা আসলে কি? | what Is Juice Business
আপনারা কি জানেন জুস শুধু ফল থেকেই হয় না। জুস বিভিন্ন সবজির থেকেও তৈরী করা যায় যা সাস্থের জন্য খুবই উপযোগী। তবে কি ধরনের জুস আপনি তৈরী করবেন তা নির্ভর করবে আপনার কাস্টমার এর চাহিদার উপর। আপনাকে অবশ্যই আপনার কাস্টমার এর চাহিদার সম্মান করতে হবে এবং নিত্যনতুন রেসিপি তাদের সাথে শেয়ার করতে হবে। এতে করে আপনার দোকানের ইউনিকনেস বাড়বে।
আরো জানুনঃ মহিলাদের জন্য সহজ ব্যবসা আইডিয়া
জুসের দোকান কিভাবে শুরু করবেন? | How can Start a juice shop business
জুসের দোকান শুরু করার আগে প্রথমেই আপনাকে প্লান করে নিতে হবে। যে প্লান অনুযায়ী আপনার ব্যবসা আগালে লাভবান হবেন। পরিকল্পনায় আপনাকে ঠিক করতে হবে আপনার দোকানের অবস্থান। দোকানের অবস্থান এমন যায়গায় ঠিক করবেন যেখানে মানুষ সমাগম অনেক। তার পর ঠিক করবেন কোথা থেকে ফল আনবেন কেননা আপনার ব্যাবসার প্রধান কাচামাল হলো ফল। সুতরাং প্রথমেই আপনাকে ফলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবারাহ নিশ্চিত করতে হবে। তারপর ঠিক করবেন মূলধন। এবং সর্বশেষ এ মার্কেটিং কিভাবে করবেন এটা ঠিক করার পর আপনি ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
দোকানের জন্য লোকেশন নির্ধারণঃ
জুসের ভালো ব্যবসা করতে হলে আপনাকে আপনার দোকান লোকসমাগম যেখানে বেশি যেমন হাসপাতাল, বাজার, জিম, স্কুল বা কলেজ এর নিকট খুলতে হবে। যেন সহজেই আপনার দোকান লোকের নজরে আসে। আপনার দোকানের সাথে ইউনিক কিছু পোষ্টার বানিয়ে টাংগিয়ে দিবেন সাথে হালকা কিছু লাইটিং করে দোকানকে সাজাবেন।
আরো জানুনঃ Chocolate Business Idea
কর্মচারী নিয়োগঃ
এ ব্যাবসাতে সাধারণত কোন কর্মচারী প্রয়োজন হয় না আপনি নিজেই করতে পারবেন সব। তবে জুস তৈরির বা বিতরণের ক্ষেত্রে একজন নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। এতে আপনার কাজের সচ্চতা আসে এবং কাস্টমারকেও বেষ্ট কোয়ালিটি জুস পরিবেশন করতে পারেন।
জুসের দোকানের জন্য প্রয়োজনীয় কাচামাল | Raw material juice shop business
জুসের ব্যবসা শুরু করতে আপনার নিচের কাচামাল গুলোর প্রয়োজন হবে।
- তাজা ফল ও সবজিঃ জুসের ব্যবসার প্রধান কাচামাল হলো তাজা ফল ও সবজি। আপনার ফল তাজা এবং সতেজ না হলে উক্ত ফল বা সবজি দিয়ে আপনি টেস্টি জুস বানাতে পারবেন না। সুতরাং প্রথমেই আপনাকে তাজা ফলের সন্ধান করতে হবে।
- বরফঃ জুস তৈরির জন্য বরফ আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। মানুষ সাধারণত গরমের দিনে বেশি জুস খেয়ে থাকে। এসময় তারা ঠান্ডা জুস খেতে বেশি পছন্দ করে এজন্য আপনাকে পরিষ্কার বরবের ব্যবসা রাখতে হবে।
- ড্রাইফ্রুটসঃ অনেক কাস্টমার ড্রাইফুট এর জুস ও খেতে আগ্রহী হয়। এক্ষেত্রে আপনাকে কিছু ড্রাইফ্রুট রাখতে হবে আপনার দোকানে।
জুসের দোকানের জন্য যন্ত্রপাতি | Equipment juice shop business
জুস প্রস্তুতের জন্য আপনার কিছু যন্ত্রপাতি এবং বাসন পত্রের প্রয়োজন হবে। জুসের দোকানের জন্য প্রথমেই প্রয়োজন হবে জুস তৈরির মেশিন বা ব্লেন্ডার, তার পর আপনার ফল এ সবজি গুলো সতেজ রাখতে একটি ফ্রিজ, ফল কাটার জন্য একটি ছুরি এবং চপিং বোর্ড রাখতে হবে, তাছাড়া আপনার জন্য একটি বড় সাদা চশমা এবং জুস কাস্টমার এর নিকট সার্ভ করার জন্য কিছু প্রিমিয়াম কোয়ালিটির গ্লাস ইত্যাদি এর প্রয়োজন হবে।
জুসের দোকানের জন্য প্রয়োজনীয় লাইসেন্স | juice shop business Licence
জুসের দোকানের জন্য বাংলাদেশে থাকলে আপনাকে নিম্নলিখিত লাইসেন্স গুলো করতে হবে।
- ট্রেড লাইসেন্সঃ আপনাকে প্রথমেই আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লোকেশনের ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভার থেকে আপনাকে ৫০০-১০০০ টাকা দিয়ে একটি ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে। এটা ছাড়া ব্যবসা পরিচালনা করা কষ্টসাধ্য।
- ট্রেডমার্কঃ আপনি চাইলে আপনার ব্যবসার নামে এবং লোকের বিপরীতে ট্রেডমার্ক নিবন্ধন করতে পারেন তবে এটা শুধুমাত্র আপনার ব্যবসাকে ইউনিক করতে আপনার কাজে লাগবে।
আপনি যদি ইন্ডিয়াতে জুসের ব্যবসা করতে ইচ্ছুক হয় তাহলে আপনাকে বেশকিছু লাইসেন্স নিতে হবে। যেমনঃ
- FSSAI: যেহেতু এই ব্যবসাটি খাদ্য সম্পর্কিত এজন্য আপনাকে এই লাইসেন্সটি অবশ্যই নিতে হবে।
- GST: আপনাকে আপনার ব্যবসার বিপরীতে জি এস টি লাইসেন্স করতে হবে।
- ট্রেড লাইসেন্সঃ সর্বশেষ আপনাকে অপনার ব্যবসার জন্য ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে। ট্রেড লাইসেন্স না করলে আপনার বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।
আরো জানুনঃ Islami Bank Loan
প্রয়োজনীয় মূলধন | Investment
জুসের ব্যবসার জন্য আপনাকে খুব বেশি হলে ৫০ থেকে ১ লক্ষ টাকার যোগার করতে হবে। তবে আপনি চাইলে আরো কমেও শুরু করতে পারেন। এ ব্যবসার জন্য বেশি খরচ হয় ফ্রিজ এবং ব্লেন্ডার মেশিন এর জন্য। তবে আপনি যদি পুরাতন ফ্রিজ এবং মোটামুটি লেভেল এর একটি ব্লেন্ডার জোগাড় করতে পারেন তাহলে আপনি খুব কম খরচে এই ব্যাবসা শুরু করতে পারবেন।
লাভের পরিমান | juice shop business Profit
জুসের ব্যবসায় আপনার প্রায় ৪০-৫০% লাভ থাকে। ফলের ধরন অনুসারে প্রতিগ্লাস জুস বিক্রি হয় ২০ থেকে ৫০ টাকা পযন্ত যা তৈরী করতে আপনার লাগবে সর্বোচ্চ ১০-৩০ টাকা। এখন আপনি যদি প্রতিদিন ৫০-৭০ গ্লাস বিক্রি করতে পারেন তাহলে মাস শেষে অনায়াসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ব্যবসার ঝুঁকি সূমহ | juice shop business Risk
এই ব্যবসায় আপনার ঝুঁকির তেমন কিছু নায়। তবে আপনি যদি তাজা সবজি ব্যবহার না করেন তবে দ্রুত আপনার কাস্টমার হারাতে থাকবেন তাছাড়াও নষ্ট ফলের জুস বানালে কাস্টমার আপনার বিরুদ্ধে কেস পযন্ত করতে পারে সুতরাং সাবধান থাকবেন এসকল বিষয় এ।
FAQ
প্রশ্নঃ জুসের ব্যবসার জন্য প্রথমে আপনার কি করা লাগবে?
প্রশ্নঃ জুসের দোকানের জন্য উপযুক্ত স্থান কোনটি?
প্রশ্নঃ একটি জুসের দোকান থেকে মাস শেষে কত লাভ করা যায়?
আরো জানুনঃ
[ms_get_published_post]