আজ আমরা আলোচনা করবো ইন্টারভিউ টিপস নিয়ে । আমরা অনেকেই ইন্টারভিউ দেওয়ার আগে ইন্টারভিউ এর জন্য টিপস খুজে থাকেন । তো আজকের পোষ্টে আমরা ইন্টারভিউতে যাবার আগে যেসকল কাজ গুলো আবশ্যিক করতে হবে সে সম্পর্কে একটি ধারনা দেওয়া হবে ।
যা যা থাকছে
চাকরি কতটা কঠিন
বর্তমান সময়ে চাকরি এমনই এক ধনে পরিণত হয়েছে যা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। আবার খুঁজে পেলেও তা মনমতো না হওয়ার আশাই অধিকাংশ। আমাদের চলার পথে সকলকেই একটি পেশা বেছে নিতে হয়।
সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনের জন্যে একটি সফল পেশা নির্বাচন করা রীতিমত একটা চ্যালেন্জ। আর এই বহুল জনসংখ্যার দেশে মনমতো ও সফল একটি চাকরি পেতে চাইলে কাঠখড় কম পোড়ালে চলবে না একদমই। নিজেকে কাঙ্খিত পদের জন্যে যোগ্য করে তুলতে না পারলে চাকরি তো দূরে থাক সাক্ষাৎকারে গিয়েও অপমানজনক পরিস্থিতি তৈরি হবে ।
তাই যেহেতু চাকরিটা ভীষণ দরকার, তাই আর দেরি করলে চলবে না । এদিকে ওদিকে রাস্তার দেয়ালে টানানো পোস্টার দেখলেই কি চাকরি হবে? না , হবে না। চাকরী পেতে হলে আমাদের অনেক জানা অজানা বিষয়, বিভিন্ন তথ্য, অনেক টিপস জানাতে হবে যেগুলো শুধু চাকরি পেতে না, চাকরি না হওয়ার হতাশা থেকেও আমাদের মুক্তি দিবে।
এই টিপসগুলো আপনাকে চাকরির জন্যে যথাযথ প্রস্তুতি নিতে, কাজের সাথে জড়িত চাপ হ্রাস করতে এবং একটি ইতিবাচক ও সফল চাকরির সাক্ষাৎকারের অভিজ্ঞতার জন্য নিজেকে তৈরি করতে সহায়তা করবে। চলুন গুরুত্বপূর্ণ টিপস গুলো জেনে নেই –
ইন্টারভিউ দেওয়ার আগে প্র্যাকটিস বা অনুশীলন করুন
ইন্টারভিউ টিপসের প্রথমেই ধারনা নিয়ে নিন নিয়োগকর্তারা আপনাকে কি কি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারেন এবং আপনার উত্তরগুলি কিভাবে উপস্থাপন করবেন, এমন ধরনের চাকরীর সাক্ষাৎকারের প্রশ্নগুলি পর্যালোচনা করুন।
আপনার উত্তরগুলিতে এমন দক্ষতা ও জোর থাকা উচিত যা নিয়োগকর্তার পক্ষে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কাঙ্খিত পদের সাথে প্রাসঙ্গিক থাকে। উত্তরগুলি অবশ্যই হবে নির্দিষ্ট, তবে সংক্ষিপ্ত।
কাজের তালিকার পর্যালোচনা, প্রয়োজনীয়তার একটি তালিকা তৈরি করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতার সাথে মিলিয়ে উত্তর দেওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে থাকুন।
ইন্টারভিউ এর আগে কোম্পানি সম্পর্কে ধারনা লাভ
আপনি যে সংস্থাটি ইন্টারভিউ দিতে যাবেন সে কোম্পানি সম্পর্কে গবেষণা করুন এবং আপনি যা জানেন তা প্রদর্শন করুন ।
আপনাকে সংস্থাটি সম্পর্কে অবশ্যই জিজ্ঞাসা করা হবে। অতএব যেখানে সাক্ষাৎকারে যাবেন সেই সংস্থা সম্পর্কে গবেষণা করুন, এবং নিজেকে প্রস্তুত করুন। যদি এই প্রশ্ন টি না জিজ্ঞাসা করা হয়, তবে আপনার নিজেরই সংস্থা সম্পর্কে কী জানেন তা প্রকাশ করার চেষ্টা করা উচিত।
উদাহরণস্বরূপ, আপনি বলতে পারেন, “আমি লক্ষ্য করেছি যে আপনি যখন গত বছর একটি নতুন সফ্টওয়্যার সিস্টেম প্রয়োগ করেছিলেন তখন আপনার গ্রাহকের সন্তুষ্টি রেটিং নাটকীয়ভাবে উন্নত হয়েছিল”।
তাদের ওয়েবসাইটে কোম্পানির ইতিহাস, মিশন এবং মান, কর্মী, সংস্কৃতি এবং সাম্প্রতিক সাফল্য সম্পর্কে প্রচুর তথ্য সন্ধান করুন। যদি সংস্থার কোনও ব্লগ এবং একটি সামাজিক মিডিয়া উপস্থিতি থাকে তবে সেগুলোও অবশ্যই দেখতে হবে।
ইন্টারভিউতে যাওয়ার আগে
সাক্ষাৎকারের সময় কোন পোশাকটি পরতে হবে, আপনার জীবনবৃত্তান্তের অতিরিক্ত কপিগুলি মুদ্রণ করে সাথে রাখতে হবে, বা একটি নোটপ্যাড এবং কলম নিজের সঙ্গে রাখতে হবে এগুলো পূর্বেই গুছিয়ে রাখবেন।
শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন না। আপনার সাক্ষাৎকারের পোশাকটি পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন এবং আপনি যে ধরণের সংস্থার সাথে সাক্ষাৎকার করছেন তার জন্য উপযুক্ত কিনা তা নিশ্চিত করুন।
আপনার জীবনবৃত্তান্তের অতিরিক্ত অনুলিপি সহ একটি দুর্দান্ত পোর্টফোলিও তৈরি করে রাখুন। এভাবে প্রয়োজনীয় সকল কিছু গুছিয়ে প্রস্তুত হয়ে থাকুন।
চাকরির সাক্ষাৎকারের সময়ের আগে থেকেই উপস্থিত থাকুন
সময় মেনে চলা সবাই খুব পছন্দ করেন এবং সময় এর গুরুত্ব আমদের সবার দেয়া উচিত। সাক্ষাৎকারের জন্য সময় মতো থাকুন। নূন্যতম দশ থেকে বিশ মিনিট তাড়াতাড়ি।
যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আপনি ঠিক কোথায় যাচ্ছেন এবং সেখানে যেতে কতক্ষণ সময় লাগবে, রাস্তায় ট্রাফিক থাকবে কিনা এসব আগে থেকেই হিসাব করে নিন যেনো পৌঁছাতে দেরি না হয়।
নিজের উপর ভরসা রাখুন এবং সম্পূর্ণ সময় কনফিডেন্ট থাকুন
অনেকেই চাকরির লিখিত পরিক্ষা ভালো দিলেও সাক্ষাৎকারের সময় ঘাবড়ে যান। কিংবা লিখিত পরিক্ষা খারাপ হলে ভয় পেতে থাকেন। চাকরি না পাবা্য ভয়!! চাকরি পাওয়ার প্রচেষ্টা না করে যদি চাকরি হবে না ভেবে ভয় পেতে শুরু করেষ তাহলে কি আদৌও চাকরি হবে? ভেবে দেখুন তো! তাই পূর্বপ্রস্ততি নিয়ে সব গুরুত্বপূর্ণ কাগজ গুছিয়ে সবদিক থেকে নিজেকে কনফিডেন্ট রাখুন যেনো আপনাকে দেখেই নির্ধারণকারীদের দৃষ্টি চকচক করে এবং নিজের কনফিডেন্স এর সাহায্যে আপনিও নিজের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্যে অগ্রসর হবেন।
বর্তমান সময়ে চাকরি হয়ে গেছে অমাবস্যার চাঁদের মতো। আর তা যদি হয় সরকারী চাকরি তাহলে তো কথাই নেই। এখন বড় বড় ডিগ্রী ধারি ব্যক্তিরাও চাকরির অভাবে আছেন, অনেকেই বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছেন,নিজেরা সাবলম্বী হওয়ার জন্য, উদ্যোক্তা হওয়ার জন্যে। এটা অবশ্যই স্মার্ট চয়েজ কিন্তু সবাই তো আর একইপথে হাঁটবেন না। আজকের দিনে অনেক মানুষেরই চাকরী ছাড়া উপায় নেই।
উপসংহার
উপরে বর্ণিত মৌলিক টিপস গুলো হয়তো আপনাকে সাহায্য করতে পারে কিন্তু চেষ্টা আপনারই চালিয়ে যেতে হবে। কথায় আছে না নিজের টা নিজেরই করতে হবে, কেউ ধাক্কা দিয়ে কাজ করাবে না। চাকরির বিষয় টাও ঠিক এমনই। অনেকেই বলেন ভাগ্যের ব্যপার।
এ বিষয়ে আমি মোটেই একমত নই। কেননা প্রথমে নিজের চেষ্টা করতে হবে। এখন চেষ্টা না করেই যদি বলেন যে ভাগ্যে থাকলে হবে। এরপর চাকরি না পেয়ে বলেন যে ভাগ্যে ছিলো না তাই হয়নি।
তাহলে কি চলবে বলুন!! তাই চাকরি নিশ্চিত করতে সর্বপ্রথম করণীয় হলো অন্যের সাথে না নিজের সাথে প্রতিযোগিতা করুন। মনে রাখবেন মন থেকে সঠিক উপায়ে একটা কাজ করলে কখনো না কখনো তার মূল্য আপনি পাবেনই।