২০২৫ সালের প্রথমার্ধে বাংলাদেশের জাতীয় সঞ্চয় পত্র (Sanchayapatra) বা সেভিংস সার্টিফিকেট-গুলোর মুনাফার হার (ইনটারেস্ট রেট) বড় ধরনের পরিবর্তন করেছে সরকার। জাতীয় সঞ্চয় সেক্টরকে আরও আকর্ষণীয় করার লক্ষ্যে সরকার স্কিমগুলোর হার বৃদ্ধির পাশাপাশি একটি বাজার-ভিত্তিক রিভিউ মেকানিজম চালু করেছে।
নতুন হার এবং নতুন নিয়মাবলি
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, সঞ্চয়পত্রের হার প্রতি ছয় মাসে রিভিউ করা হবে এবং এটি পাঁচ বছরের ও দুই বছরের ট্রেজারি বন্ডের গড় রিটার্নের সঙ্গে সিঙ্ক করা হবে। এছাড়া সর্বোচ্চ ৫০ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত প্রিমিয়াম যোগ করা হতে পারে।
কিছুকাল আগে বাড়ানো হলে, জুলাই ২০২৫-এ আবার নতুন সমন্বয় করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্যারিবার সঞ্চয়পত্র (Family Sanchayapatra)-এর জন্য নতুন বার্ষিক মুনাফার হার ঘোষণা করা হয়েছে: ১ থেকে ৭.৫ লাখ টাকার বিনিয়োগে ১১.৯৩%, আর ৭.৫ লাখ টাকার বেশি ক্ষেত্রে হার দাঁড়িয়েছে ১১.৮০%।
বিভিন্ন সঞ্চয় স্কিমে নতুন মুনাফার হার
নিচে কয়েকটি জনপ্রিয় সঞ্চয়পত্র স্কিম এবং তাদের নতুন হার তুলে ধরা হলো:
-
৫ বছর বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র (Bangladesh Savings Certificate): ৭.৫ লাখ টাকার বিনিয়োগ পর্যন্ত — ১২.৪০% এবং এর উপরে — ১২.৩৭%।
-
৩-মাস প্রফিট-বিয়ারিং সঞ্চয়পত্র: নতুন হার হয়েছে প্রায় ১২.৩০%-১২.২৫% রেঞ্জে।
-
পেনশনেস সঞ্চয়পত্র (5-Year): ১২.৫৫% থেকে শুরু করে ১২.৩৭%-এ পর্যন্ত নতুন হার।
কেন এই পরিবর্তন এবং নতুন নিয়মে কি সুবিধা রয়েছে?
এই পরিবর্তনের পেছনে দুটি বড় উদ্দেশ্য রয়েছে। প্রথমত, সরকার মুদ্রাস্ফীতি ও সাধারণ খরচ বৃদ্ধি মোকাবিলায় সেভিংস স্কিমকে আরও প্রলোভনীয় করে তুলতে চেয়েছে। দ্বিতীয়ত, বাজার-ভিত্তিক হার ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার মাধ্যমে সঞ্চয়পত্রকে দীর্ঘমেয়াদে টেকসই করা হচ্ছে।
এই রিভাইজড রেট সেভারদের জন্য বড় সুযোগ তৈরি করেছে। যাঁরা পূর্বে কম আয়ে সঞ্চয় করতেন, তাঁরা এখন আরও বেশি লাভ পেতে পারবেন। তাছাড়া নতুন গঠনশীল হার ব্যবস্থাপনার কারণে ভবিষ্যতে হার আরও স্থিতিশীল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
২০২৫ সালে আনীত নতুন সঞ্চয়পত্র নিয়ম ও হারের পধ্দতি সেভারদের জন্য বেশ সুখবর। নতুন হার ও নিয়মগুলি ট্রেজারি বন্ডের সঙ্গে যুক্ত করে ঝুঁকি কমিয়ে কার্যকর রিটার্ন দিতে পরিকল্পিত করা হয়েছে। যেকোনো সেভার যারা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ বা নির্ধারিত আয়ের উৎস হিসেবে সঞ্চয়পত্র ব্যবহার করতে চান, তাদের জন্য এই পরিবর্তন বিশেষভাবে লাভজনক হতে পারে। তবে বিনিয়োগ করার আগে সুনির্দিষ্ট স্কিম (যেমন ৫-বছরের, প্যারিবার, পেনশনেস ইত্যাদি) এবং আপনার বিনিয়োগ সীমা বিবেচনায় রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
