ব্যবসা কৌশল হল প্রতিযোগিতামূলক পদক্ষেপ এবং কর্মের একটি সমনয়। যা একটি ব্যবসা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে, সফলভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে, কর্মক্ষমতা শক্তিশালী করতে এবং সাংগঠনিক লক্ষ্য অর্জন করতে ব্যবহার করে। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য কীভাবে ব্যবসা করা উচিত তা এটি রূপরেখা দেয় ব্যবসা কৌশল।
যা যা থাকছে
ব্যাবসা করতে পরিকল্পনা কেন করবেন:
ব্যবসা কৌশল করার জন্য প্রথমেই যে ব্যাবসাই শুরু করেন না কেন তার জন্য পরিকল্পনা করুন। যারা ব্যবসার জন্য সঠিক পরিকল্পনা করে না বা ব্যবসার কৌশল আগে থেকে ঠিক করে না তারা বিপদ, ক্ষতির মুখোমুখি হয় পরে ব্যাবসা ছেড়ে দেয়। কেননা ব্যাবসা করতে হলে ধয্য, সময়, শ্রম, সঠিক কৌশল জানার দরকার হয়।
বিজনেস হটাৎ হটাৎ হয় না, ফ্যামেলি বুঝিয়ে ফ্যামেলিকে সাথে নিতে হবে এবং যারা অভিজ্ঞতা ব্যাক্তি তাদের সাথে নিয়ে আলোচনা করতে হবে। সকলের পরামর্শ নিয়ে মতামত ঠিক ঠাক করে, কোথায় কেমন বিজনেস করবো ,কোথায় সবথেকে বেশি চলাচল হয় লোকজনের সমাগম সেইসব জায়গায় বিবেচনা করে ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা করে বিজনেস টা শুরু করতে হবে। সফল ব্যাক্তি যে কোন কাজ করার পৃর্বে পরিকল্পনা করে নেয়।পরিকল্পনা ছাড়া কোনো কাজেই সফল হবেন না। সুতরাং পরিকল্পনা করে সঠিক কৌশল অবলম্বন করে ব্যবসা শুরু করুন।
আরো জানুনঃ ২০২৩ সালে লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া ।
গ্রাহকের চাহিদা কি কি সেটা জানুন:
আপনি যেহেতু ব্যাবসা করতে চান তাহলে আপনার আগে জানা উচিত এই স্থানে গ্রাহকের চাহিদা কি কি,তারা আসলে কি চাই বেশি। এখনও চাই আবার ভবিষ্যতেও চাইবে এইসবের চাহিদা জেনে নিবেন আশপাশ থেকে। তাদের সাথে আপনি ভালো ব্যাবহার করুন, তারা কি চাই সেগুলো দেখুন কোনগুলার চাহিদা বেশি এবং সেইগুলোর মেটানোর চেষ্টা করুন।
ধয্য ধরে অটল থাকুন:
আপনি যে কাজ ই করেন না কেন আপনাকে ধয্য সহ থাকতে হবে। আপনি আপনার কাজে অটল থাকবেন এবং অটল থাকার চেষ্টা করুন। একটা উদাহরণ দেই – একটা আমড়া গাছ, সজিনা গাছ বা সুপারি গাছ এসব গাছের ডগা কিন্তু নরম গোরা ও সক্ত না হাল্কা ঝড় আসলেই উড়ে উপরে বা ভেংগে যায়। কিন্তু একটা বটগাছের দিকের খেয়াল করুন বটবৃক্ষ কিন্তু যত ঝড় বৃষ্টিই আসুক না কেন তার এই একই স্থানে ধরে রাখে তার জায়গা পরিবর্তন করে না এক কথায় ধরয্যশীলতা বোঝায়। এখন আসল কথা হলো আপনি ব্যাবসা করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই অটল থাকতে হবে আপনার প্লানে।
ব্যবসা কৌশল এ ধয্য ধরে অটল না থাকার কারনে যারা নতুন দোকান করে অনেক লোকসান ঘটে থাকে যা মন খারাপের কারণ দারায়,মন খারাপের কিছুই নেই আপনি আপনার অস্থিরতা বাদ দিয়ে নিজের ব্যাবসায় মন লাগান। ব্যাবসা ভালো পজিশনে দার করাতে চাইলে একটু সময় লাগবে,সময় নিয়েই সব সম্ভব কেননা ব্যাবসা করতে হলে আপনার দরকার মন, মানসিকতা, সময়, শ্রম এবং দক্ষতার প্রয়োজন হয়।
এগুলোয় যদি আপনি পাশ করেন তবেই আপনি ব্যাবসায় সফল হবেন বেশি। ব্যাবসায় যদি তাড়াহুড়ো করেন, আর বলেন আমার সফল হলোনা এতো টাকা পয়সা খরচ করলাম, কেউ আসেনা এমন মনে করলে আপনার হবেনা। আপনি সফল হতে চাইলে সময় লাগবে তবেই আপনি সফল হবেন ।
ঝুঁকি গ্রহন করুন এবং লক্ষ্যে স্থির করুন:
সবারই সপ্ন থাকে আমার ব্যাবসায় যেনো লাভবান হয়, উন্নতি হলে অনেক ভালো হতো। এই লাভবান উন্নতি হওয়ার জন্য নতুন নতুন উপায়, সন্ধান, রাস্তা বের করুন এবং আপনার আশেপাশের দোকানী বা প্রতিযোগিতার থেকে আপনার ব্যবসাটাকে আলাদা করুন এবং আকর্ষণীয় করে তুলুন যেন সবাই আপনার দোকানেই আকর্ষীত হয়। এইগুলা নিজের সৃজনশীলতা থেকে উপায় বের করে লাভবান হতে সহায়তা করবে ইনশাআল্লাহ।
ব্যাবসা হোক আর যেটায় হক সব্কিছুই ধয্যের ব্যাপার। আর ব্যাবসা করলেই রাতারাতি টাকার মালিক হওয়া যায় না। তবে টাকার মালিক হতে হলে অবশ্যই স্থিরতা দরকার তাছাড়া সম্ভব না উপার্জন করা। উপার্জন ছাড়া তো আর টাকার মালিক হওয়া যায় না। অতএব একদিনে কোনো কিছুই সম্বব না।
সফলতা পেতে হলে ঝুঁকি নিতেই হয়। ঝুঁকি নেওয়া হয় উন্নতির জন্য। ঝুকি নেওয়ার আগে আপনাকে গণনা করতে হবে কখন ঝুঁকি নিবেন আর কখন নিবেন না । ঝুঁকি অপরিকল্পিতভাবে হয়ে থাকে তখন আপনাকে লোকসানের দিক নিয়ে যাবে। সুতরাং সুধু ঝুকি নিলেই হবে না ঝুকি নেবার পর এর ফল সম্পর্কেও তৈরী থাকতে হবে।
পরিচিতি গড়ে তুলুন:
ব্যবসা কৌশল এর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ টপিক হলো নেটওয়াকিং বা পরিচিতি গড়ে তুলুন। ব্যবসা হোক বা চাকরি আপনাকে টিকে থাকতে হলে আপনার নিশের রিলেটেড লোকের সাথে পরিচয় গড়ে তোলা উত্তম কাজ। যত পরিচিত হবেন ততলোক আসবে আপনার দোকানে কেননা যার সাথে পরিচিত হবে সে আবার তার পরিচিত কাওকে আনবে এভাবে করতে করতে এক সময় দেখা যাবে ফেমাস হয়ে যাবেন।
ফেমাস হতে হলে অবশ্যই ভালো ব্যাবহার আর ভালো মালামাল, ন্যায্য দামে তাহলেই আপনি ফেমাস বিজনেস ম্যান। কিন্তু গ্রাহকরা সবসময় চায় একজন সৎ ব্যক্তির থেকে মালামাল ক্রয় করতে যে তাকে ঠকাবে না। আপনি যদি একবার আপনার কাস্টমারে নিকট পরিচিত হতে পারেন এবং তাদের বিশ্বাস অর্জন করতে পারেন। তাহলে আপনাকে আর মার্কেটিং করতে হবে না আপনার কাস্টমার ই আপনার হয়ে মার্কেটিং করে দিবে ।
ডিজিটাল করুন ব্যবসাকে:
আপনার ব্যবসাকে ডিজিটাল করুন। বর্তমান সময়ে ফেসবুক আইডি সবারই আছে। আপনি ব্যাবসায় আরও উন্নতি করতে চাইলে এই ফেজবুকে আপনার আরেকটা দোকান খুলে ফেলুন। দোকান খুলতে ফেজবুকে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্টানের নামে একটি পেজ খুলে ফেলুন। সাথে একটি গ্রুপ ও খুলে ফেলুন ।
গ্রুপ বা পেজে আপনার পরিচিত বা অপরিচিত সবাইকেই এড করবেন। ফেসবুকে যে বন্ধু গুলো আছে ইনভাইট করে নিজের পেজ বা গ্রুপে আনবেন এবং যা যা বিক্রি করবেন তার ছবি গুলো দিয়ে আকর্ষীত করবেন তাদের কাছে । প্রডাক্ট সম্পর্কে যা যা সুবিধা অসুবিধা আছে সব গুরুত্ব সহকারে তুলে দিন পেজে।যখন আপনি পরিচিত হয়ে যাবেন তখন আস্তে আস্তে কাস্টমার বাড়বে । বেচাকেনায় লাভ চাইলে সকলের ভালো পণ্য দিতে হবে তা না হলে সম্ভব না লাভবান হওয়া। তাই সঠিক পথে থাকবেন দেখবেন ইনশাআল্লাহ সফল হয়েছেন।
পরিশেষে বলি আপনি যদি ব্যাবসা করতেই চান তাহলে আমাদের দেওয়া টিপস গুলো ছাড়াও অনলাইনে বা অফ-লাইনে প্রচুর ঘাটাঘাটি করুন। আপনি যত আপনার ব্যবসা নিয়ে ঘাটাঘাটি করবেন তত শিখবেন। আরেকটি কথা শুধু ভেবেই গেলেন কিন্তু কোন পদক্ষেপ কাজে লাগালেন না তাহলে আপনি আগে যা ছিলেন তাই থেকে যাবেন। সুতরাং শুরু করাটাই চ্যালেঞ্জিং । মনে রাখবেন বিন্দু বিন্দু জল দিয়েই বৃহৎ সমুদ্রের সৃষ্টি।
আরো জানুন
বিজনেস প্ল্যান লেখার 10 টি নিয়ম ?