২০২৩ সালের উপযোগী ব্যাবসা বেশির ভাগই ডিজিটাল বা অনলাইন ভিত্তিক । কেননা বর্তমান সময় টা অনলাইনে মানুষ বেশি থাকে। সুতরাং ব্যাবসাগুলো অনলাইন ভিক্তিক হলে আপনার সাকসেস হবার সম্ভাবনাও অনেক অংশে বেড়ে যায়। Covid-19 মানুষের জীবন যাত্রাকে অনেক পরিবর্তন করে দিয়েছে। আপনি যদি একটি রেস্তরার ব্যবসা শুরু করতে চান বা কোন ট্রাডিশনাল ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে প্রথমেই ভাবুন আগামী বছর ও যদি এমন কোন মহামারি হয় , তাহলে আপনি কিভাবে আপনার ব্যাবসা পরিচালনা করবেন ? সুতরাং চেনা জানা ব্যাবসা শুরু করার পরিবর্তে যুগ উপযোগী ব্যবসা শুরু করুন যেটা বর্তমানে মানুষের চাহিদা মেটাবে বা তাদের জীবন যাপন এর সাথে মিলবে।তো আপনাকে একটি ভালো ব্যাবসা পরিকল্পনা করতে হবে যেখান থেকে আপনি ভালো কিছু করতে পারেন নিজের ও দেশের মানুষের জন্য।
যা যা থাকছে
ব্যাবসা শুরু করার আগে-
- এমন একটি ব্যবসা বাছুন যেটা করতে আপনার ভালো লাগে বা আপনার আগ্রহ আছে। সুধু মাত্র টাকা দেখে কোন ব্যাবসা শুরু করতে যাবেন না তাহলে জীবনের সবথেকে বড় ভুল করে বসবেন প্রথমেই।
- ব্যবসা শুরু করার আগে আপনি যে ব্যাবসা শুরু করতে চাচ্ছেন তার চাহিদা আছে কিনা বাজারে বা সেই পণ্যটি আদেও লোকে কিনতে ইচ্ছুক কিনা যেটা এনালাইসিস করুন।
এই পোষ্টটি তাদের জন্য যারা ব্যাবসা শুরু করতে চলেছেন বা ব্যাবসা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন।
আপনি একটি ব্যাবসা শুরু করতে চান কিন্ত কি ব্যবসা শুরু করবেন তা ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না ?কোন ব্যবসা টি আপনার জন্য ভালো হবে ? কোন ব্যবসাটি শুরু করলে আপনি সময়ের সাথে সাথে ব্যবসাটি বড় করতে পারবেন ? এ সবকিছু আজ আমরা এই ব্লগের মাধ্যমে জানাবো আপনাদের।
২০২৩ সালের জন্য দারুন ১০ টি ব্যবসা আইডিয়া
আপনি যদি ব্যবসা করতে মনস্থির করে ফেলেন তাহলে এর ভেতর থেকে একটি প্লান আপনি বেছে নিতে পারেন।
কনসাল্টিং । Consulting
আপনি যদি কোন নিদিষ্ট বিষয়ে যেমনঃ ব্যবসা, স্যোসাল মিডিয়া, মার্কেটিং, লিডারশিপ, লিডারশীপ বা কমিউনিকেশন ইত্যাদী বিষয়ে পারদর্শী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি নিজেই মানুষকে কনসাল্ট দিতে পারেন এবং আস্তে আস্তে আপনার ব্যবসা বড় করতে আপনি আপনার মত আরো অনেকে হায়ার করে আপনি বিভিন্ন বিষয়ে মানুষকে দিক নির্দেশনা বা গাইড করতে পারেন । যা একটি লাভজনক ব্যবসা মডেল।
অনলাইন রিসেলিং | online reselling
যারা পোশাক বিক্রি সম্পর্কে আগ্রহী কিন্তু টাকার সমস্যা তারা একটি অনলাইন রিসেলিং ব্যবসা শুরু করার কথা চিন্তা করতে পারেন। এব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার একটি ফেজবুক পেজ বা ইন্সট্রাগ্রাম ফেজ বা একটি ওয়েব সাইট খুলে পাইকেরি দোকান থেকে আপনার ফ্যাশন সেন্স এর উপর নির্ভর করে কিছু পণ্যের ছবি তুলে তা আপনার পেজে দিয়ে বা বিভিন্ন গ্রুপে দিয়ে বিক্রি করতে পারেন। এটা আপনি আপনার সাইড বিজনেস হিসেবেও নিতে পারেন তবে এর জন্য আপনাকে অনেক সময় এবং ধর্যের পরিক্ষা দিতে হবে । যখন আপনার বিক্রির পরিমান বাড়বে তখন আপনি পোশাক এর সাথে সাথে আরো অনেক পন্য বিক্রি করতে পারবেন এবং একটি ভালো পরিমান অর্থ প্রতি মাসে ইনকাম করতে পারবেন।
অনলাইন প্রাইভেট বা কোর্স করানো । Online Teaching
বর্তমানে অনলাইন শিক্ষার চাহিদা উদ্দ্যক্তাদের জন্য নতুন সম্ভবনার সৃষ্টি করেছে । যেহেতু এটি একটি অনলাইন উদ্যোগ সেহুতো আপনি যেকোন একটি বিষয় বেছে নিতে পারেন যে বিষয় এ আপনি পারদর্শী । সেটি হতে পারে এস ই ও বা ডিজিটার মার্কেটিং, গান শেখানো, গ্রাফিক্স এর কাজ শেখানো বা ইংরেজি ভাষা শেখানোর মাধ্যমেও আপনি অনেক টাকা ইনকাম করতে পারেন। আর এই উদ্যোগটি বড় করা খুবই সহজ আপনি আপনার সাথে আরো কয়েকজন কে নিয়ে একটি অনলাইন কোচিং চালু করতে পারেন যেটা করণা পরবর্তী কালে সবথেকে জনপ্রিয় একটা ব্যবসা মডেল হয়ে পড়ছে।
অনলাইন বুককিপিং । Online Bookkeeping
বুককিপিং হলো কোন কম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেনের নিয়মিত ভিক্তিতে রেকর্ডিং করা। সঠিক হিসাবরক্ষক এর সাথে কোম্পানিগুলোর মূল অপারেটিং , বিনিয়োগ এবং অর্থায়ন এর সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।
বুক কিপার রা এমন ব্যাক্তি যারা কোম্পানির সমস্ত আর্থিক তথ্য পরিচালনা করে । সুতরাং আপনার যদি এই বিষয়ে ভাল ঞ্জান থাকে তাহলে আপনি বুককিপিং এর কাজটি অনলাইনে সম্পাদন করতে পারেন । প্রথমেই বড় কম্পানিতে অফার দিয়ে বেকুব হইয়েন না কেননা তাদের নিজস্ব বুককিপার রাখা থাকে যারা সুধু মাত্র তাদের কম্পানির কাজ করে থাকে । এখন আপনাকে বুদ্ধি করে এমন সব ব্যবসা এর সাথে যোগাযোগ করতে হবে যারা আলাদা করে বুককিপার রাখার গুরুত্ব বুঝে না বা বুঝলেও অর্থের অভাবে বুক কিপার রাখতে পারে না আপনি তাদের সাথে কথা বলে অনলাইনে বুককিপিং দেওয়ার গুরুত্ব বোঝাতে পারলে আপনি নিশ্চিত থাকেন বছর শেষে আপনি কমপক্ষে ১০০ ব্যবসা এর বুককিপিং এর দায়িক্ত পেয়ে যাবেন।
মেডিকেল কুরিয়ার সার্ভিস । Medical Courier Service
আপনার যদি একটি নিজস্ব বা নির্ভরযুক্ত পরিবহন ব্যবস্থা এবং ভাল সময় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা থেকে থাকে তাহলে আপনি একটি নিজস্ব কুরিয়ার ব্যবসা শুরু করতে পারেন , তবে এটা আর ৫০০টা সাধারন কুরিয়ার হবে না এই কুরিয়ারে আপনি বিভিন্ন ল্যাব পরিক্ষার রির্পোট , প্রেসক্রিপশনের ওষুধ এবং মেডিকেল রিলেটেড সকল সামগ্রী পরিবহন করবেন। আপনি নিজেই এ সেবা দিতে পারেন বা বিভিন্ন শহরে প্রতিনিধি নির্ধারণের মাধ্যমে এ ব্যবসা শুরু করতে পারেন । বর্তমানে এই ব্যবসার চাহিদা প্রায় আকাশচুম্বী । শুধু একটু বুদ্ধি খাটিয়ে ব্যবসাটাকে করতে হবে আপনাকে তাহলে আর পিছে তাকাতে হবে না আশাকরি।
এ্যাপ ডেভোলোপমেন্ট । App Development
আপনার যদি টেকনোলোজি ভালো লাগে , আপনি যদি টেকনোলজি বা কোডিং বিষয় এ অভিঙ্গ হন তাহলে আপনি আপনার ক্যারিয়ার হিসেবে এ্যাপ ডেভোলোপমেন্ট বেছে নিতে পারেন। বর্তমানে প্রায় প্রতিটি মানুষের কাছে স্মাট ফোন রয়েছে আর এই স্মাট ফোনে প্রতি নিয়ত নতুন নতুন এ্যাপ এর চাহিদা বেড়েই চলেছে । এই ইন্ডাস্ট্রি এখন বিলিয়ল ডলারের সুতরাং এই সেক্টরে যদি আপনি ক্যারিয়ার তৈরী করেন তাহলে ভালো পটেনশিয়াল পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর ছোট্র একটা টিপস এখন আপনি যদি ভি আর এর জন্য এ্যাপ তৈরী করেন তাহলে আপনি খুব সহজেই একটা ভালো পজিশনে পৌছাতে পারবেন বলে আমি মনে করি।
রাইড শেয়ার ড্রাইভিং । Rideshare Driving
আপনার যদি নিজস্ব ব্যবসা শুরু করা ঝুকিপূর্ণ মনে হয় তাহলে আপনি আপনার গাড়ি বা মোটরসাইকেল ব্যবহার করে রাইড শেয়ার ড্রাইভিং শুরু করতে পারেন । এতে আপনার কোন ইনভেষ্টমেন্ট করা লাগবে না । আপনি আপনার ইচ্ছা মত সময়ে গাড়ি চালিয়ে একটা ভালো এমাউন্ট ইনকাম করতে পারবেন। আপনি পাঠাও , উবার, ওভাই ,ইত্যাদি রাইড শেয়ার এর মাধ্যমে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
ড্রপশিপিং । Dropshipping
বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে আপনি ড্রপ শিপিং শুরু করতে পারেন। এটি একটি ঝুকিমুক্ত ব্যবসা বলা যায়। আপনি যদি বাংলাদেশে ড্রপশিপিং করতে চান তাহলে আপনার সম্ভাবনা প্রচুর বলা চলে যদি আপনি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেন। ড্রপশিপিং এর জন্য আপনাকে পাইকেরি ব্যবসাহী বা সরাসরি মেনুফেকচারকারি এর সাথে যোগাযোগ করতে হবে। আপনি আপনার পেজ বা ওয়েব সাইট এর মাধ্যমে কাস্টমারের থেকে অডার গ্রহন করে তা মেনুফেকচারির কাছে পাঠিয়ে দিবেন সে প্যাকিজিং করে আপনার কাস্টমার এর কাছে কুরিয়ার করে দিবে । এখানে আপনার কাজ হবে শুধু অডার তৈরী করা। সেটা আপনি পেইড প্রমোশন করেও করতে পারেন আর অর্গানিক ভাবেও করতে পারেন । তবে অর্গানিক ভাবে অডার জেনারেট করা প্রথম পর্যায়ে খুবই কঠিন হয়ে পরে। এক্ষেত্রে আমাদের সাজেশন থাকবে আপনি কিছু বাজেট রেখে পেইড প্রমোশন দিয়ে শুরু করুন। আমি আশাবাদি আপনি সফল হবেন।
কাস্টম টি-র্শাট প্রিন্টিং । Custom T-shirt Printing
আপনি যদি যুগ উপোযগী ব্যবসা খুজে থাকেন তাহলে কাষ্টম ডিজাইন প্রিন্টিং বর্তমানের সবথেকে জনপ্রিয় একটি ব্যবসা । কাস্টম টি-র্শাট, মগ, প্লেট ইত্যাদী এর চাহিদা প্রচুর। আপনি শুধুমাত্র একটি ফেজবুজ পেজ খুলেই এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন আপনি কাস্টমারের থেকে অডার নিয়ে ডিজাইন আপনার পাশবর্তী কোন প্রিন্টিং দোকান থেকে প্রিন্ট করে ডেলিভারি করতে পারেন। অথবা আপনি নিজেই প্রিন্টিং মেশিন কিনে এ ব্যবসা শুরু করতে পারেন এর চাহিদা প্রুচুর আপনি যদি সঠিক ভাবে মার্কেটিং করে এ ব্যবসা শুরু করতে পারনে তাহলে আপনি এত পরিমান অডার পাবেন যা বলা বাহুল্য। তবে আপনাকে সব সময় চোখ , কান খোলা রাখতে হবে কখন কোন ট্রেন্ড চলছে সেই বিষয়ে স্পষ্ট ধারনা থাকতে হবে । ফেজবুক ইনিস্টাগ্রাম সময় দিতে হবে কাস্টমার এর সাথে এঞ্জেইজমেন্ট থাকতে হবে না হলে এব্যবসা আপনার জন্য না।
হোম কেয়ার সার্ভিস । Home Care Service
বর্তমানে বেশির ভাগ পরিবারে স্বামী- স্ত্রী দুজনেই চাকুরি করেন । এ জন্য পরিবারের বৃদ্ধ রা সারাদিন একা একা থাকে । তাদের ঠিকভাবে পরিচর্যা করা হয় না । সঠিক সময়ে ওষুধ খেতে পারে না , খাবার এর ঠিক থাকে না এই সমস্য বর্তমানের প্রায় ৫০% পরিবারে হয়ে থাকে। আপনি এসমস্যা সমাধান করতে পারেন একজন হোম কেয়ার দিয়ে । হোম কেয়ার এর মহিলারা এই বয়োজষ্ঠ ব্যক্তিদের সেবা যত্ন করবে তাদের সঠিক সময়ে খাবার দিবে ওষুধ খাওয়াবে সর্বোপরি তাদের দেখাশোনা করবে। এতে করে পরিবারটি যেমন নিশ্চিন্ত ভাবে তাদের কাজে যেতে পারবে একই ভাবে এই সেবার জন্য আপনিও একটি ভালো ব্যবসা করে নিতে পারবেন। হোম কেয়ার সার্ভিস এর মাধ্যমে আপনি একই সাথে দুই দিক ব্যবসা করতে পারবেন। প্রথমে পরিবার থেকে একটা মাসিক চার্জ নিবেন সেখান থেকে কিছু চার্জ কেটে আপনি হোম কেয়ারে নিযুক্ত মহিলাদের বেতন দিবেন।একই সাথে আপনি বায়োজষ্ঠদের প্রয়োজন এমন অনেক পন্য বিক্রির মাধ্যমেও ভালো পরিমান অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। আর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই ব্যবসা একেবারেই নতুন সুতরাং এই সেক্টরে ভালোকিছু করতে পারা আপনার জন্য সুধুমাত্র সময়ের ব্যাপার।
উপসংহার
পরিশেষে আপনি যদি সত্যই ব্যবসা করতে ইচ্ছুক থাকেন । তাহলে আমার সাজেশন থাকবে আপনি ব্যবসা শুরু করার আগে যে ব্যবসা করতে চাচ্ছেন সেই ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত সব জানুন কোথা থেকে কাঁচা-মাল পাবেন । কোথায় সেল করতে হবে আপনার কাস্টমার কারা এছাড়াও ব্যবসা এর মধ্যে আরো অনেক কিছু থাকে । অতএব ব্যবসা সম্পর্কে সম্পন্ন ঙ্গান নিয়ে তারপর ব্যবসায় নামুন । তা না হলে আপনিও আর ১০টি ব্যবসা এর মত বছর ঘুরার আগেই সব কিছু গুছিয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দিবেন।আপনার জন্য রইল হাজারো শুভকামনা ।
আপনি যদি আপনার কাজের কমিয়ে সর্বাধিক মুনাফা অর্জন করতে চান , তাহলে আপনার বর্তমান কাজের পাশাপাশি যেকোন একটি ছোট ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এতে করে আপনি যেমন এক্সট্রা টাকা কামাতে শুরু করবেন ঠিক একই ভাবে ছোট ব্যবসাটিকে ধীরে ধীরে বড় করতে পারবেন কোন ঝামেলা ছাড়া।বেচে থাকার জন্য অর্থ উপার্জন সবথেকে বেশি প্রয়োজন। আপনি যদি আপনার চাকুরির পাশাপাশি ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে এমন বেশ কয়েকটি ব্যবসা রয়েছে যা আপনি যেকোন কাছের পাশা-পাশি শুরু করতে পারেন।যেমন অনলাইন শপ, ড্রপশিপিং, রিসেলিং ইত্যাদী।